হোয়াটসঅ্যাপ কি? হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম! WhatsApp Messenger

হোয়াটসঅ্যাপ কি? হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম! WhatsApp Messenger

একটা সময় মানুষ যোগাযোগের জন্য চিঠির উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে, যে কোন ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম। কারণ, অল্প সময়ের ব্যবধানে যোগাযোগ করতে রয়েছে অনেক ডিভাইস এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
তাদের ভিতর উল্লেখযোগ্য: ফেইসবুক, টুইটার, ভাইবার, ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ সহ আরো অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
আজ আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে দেখতে চলেছেন, হোয়াটসঅ্যাপ এর ছোট্ট একটি রিভিউ। আশা করছি, এই ওয়েবসাইটের বিগত দিনের পোস্টগুলোও দেখবেন।
তাহলে চলুন শুরু করি!
হোয়াটসঅ্যাপ কি?
এটি একটি বহুল জনপ্রিয় সোশাল নেটওয়ার্ক মাধ্যম। বর্তমানে ১৮০ টি দেশের প্রায় ২ বিলিয়ন লোক, পরিবার এবং বন্ধু বান্ধবদের সাথে সব সময় কানেক্টেড থাকতে, ব্যবহার করছেন “হোয়াটসঅ্যাপ
হোয়াটসঅ্যাপের প্রথম যাত্রা শুরু হয়, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ অর্থাৎ আজ থেকে ১২ বছর আগে। প্রথমদিকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে শুধুমাত্র মেসেজ করার সুযোগ থাকলেও, বর্তমানে রয়েছে ভিডিও, ভয়েস কল, লোকেশন এবং ডকুমেন্টস পাঠানো সহ আরো বেশ কিছু চমকপ্রদক ফিচার।
যেভাবে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলবেন:
• প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপস টি, প্লে স্টোর অথবা অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করুন এবং ওপেন করুন।
• এরপর Agree & Continue বাটনে ক্লিক করুন এবং ফোন নাম্বার দিয়ে “Done” বাটনে ক্লিক করুন।
• এরপর ফোনে আসা ৬ ডিজিট ভেরিফিকেশন কোড দিন এবং “Done” বাটনে ক্লিক করুন।
• এরপর ফার্স্ট নেম এবং লাস্ট নেম দিয়ে “Create Account” এ ক্লিক করুন। এছাড়াও আপনারা চাইলে, ফেসবুকের তথ্য দিয়েও একাউন্ট খুলতে পারবেন।
[ হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলার পর, অবশ্যই সিকিউরিটির জন্য টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু করুন। ]

হোয়াটসঅ্যাপ এর বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা:
• আপনার ব্যক্তিগত কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের মেসেজ হিস্টরি এনক্রিপটেড অবস্থায় থাকে। যার ফলে আপনি ছাড়া অন্য কেউ দেখতে পারে না, এমনকি হোয়াটসঅ্যাপের কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত।
• দ্রুত এবং ধীর গতির ইন্টারনেট সংযোগ দিয়েও, একসাথে ৮ জন মিলে ভিডিও এবং অডিও কলের সুবিধা।
• আপনার বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবার নিয়ে গ্রুপ খুলতে পারার সুবিধা। পাশাপাশি এনক্রিপটেড মুডে গ্রুপ ব্যবহার করা সম্ভব। এর ফলে আপনি ছাড়া কেউ, মেসেজ হিস্টরি, ছবি, ভিডিও এবং ডকুমেন্টস অন্য কেউ দেখতে পারবেনা।
• পরিবার কিংবা বন্ধুদের মাঝে লোকেশন শেয়ার করার সুবিধা। পাশাপাশি যেকোনো মুহূর্তে লোকেশন বন্ধ ও করার সুযোগ রয়েছে।
• ফেসবুকের মত স্টরি কিংবা মাই ডে আপলোড করার সুবিধা এবং এটি ২৪ ঘন্টা পর অটোমেটিকলি বন্ধ হয়ে যায়।
• নির্দিষ্ট ছবি, ভিডিও, অডিও কিংবা ডকুমেন্টস কাঙ্খিত ব্যক্তির সাথে কনভারসেশন চলাকালীন, শুধুমাত্র একবার দেখানোর সুবিধা। (এটা এক প্রকারের প্রাইভেট চ্যাটিং বলতে পারেন। )
• গ্রুপ কলে কনভার্সেশন চলাকালীন যেকোনো মুহূর্তে বের হওয়ার সুবিধা। পাশাপাশি আপনি চাইলে আবার রি-জয়েনও করতে পারবেন। এছাড়াও এই অ্যাপে রয়েছে ছোট-বড় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। যা জীবনযাত্রাকে আরো সহজ করে তোলে।


হোয়াটসঅ্যাপ এর খারাপ দিক:
• একই সময়ে একসঙ্গে একাধিক ডিভাইসে একাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন না।
• অ্যাপ এর তুলনায় ওয়েবসাইট খানিকটা স্লো।
• মাঝেমধ্যে বিভিন্ন ফিচারে ল্যাগিং সমস্যা। (ইউজারদের মতামত অনুযায়ী)
• একাউন্ট এনক্রিপটেড থাকা সত্ত্বেও, হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ আপনার/ আমার কিংবা আমাদের সম্বন্ধে যথেষ্ট তথ্য জানার ক্ষমতা রাখে। (বিভিন্ন টেকনোলজি রিলেটেড নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী।)
• আপনার পাঠানো মেসেজ পুনরায় রি-এডিট করতে পারবেন না।
• আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেকোনো মুহূর্তে ফাঁস হতে পারে। ( টেকনোলজিস্টদের মতে ) তবে বিগত দিনেও বেশ কয়েকবার, হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষের নামে তথ্য ফাঁস করার গুঞ্জন ইতিমধ্যে শোনা গেছে।

হোয়াটসঅ্যাপ এর নিয়ম নীতিমালা:
অবিশ্বাসযোগ্য হলেও এটা সত্যি যে, আমাদের ভিতর অনেক মানুষ রয়েছেন। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে, কিন্তু নির্দিষ্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর নিয়ম-নীতিমালা সম্বন্ধে, কোন প্রকার ধারণা রাখে না। যার ফলে অনেকেই বিপদের সম্মুখীন হন। 
হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ বিগত দিনের থেকে বর্তমানে বেশ কঠোর অবস্থানে গিয়েছে। কারণ, দিন সামনের দিকে যত গড়িয়ে যাচ্ছে, অপরাধীর সংখ্যা কিংবা হার ততো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের মাঝে বেশ কিছু নিয়ম-নীতি মেলা জুড়ে দিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ।
উদাহরণস্বরূপ যেমন: হুমকি, হয়রানি, অশ্লীলতা, অবৈধ, অপরাধ প্রচার, ছদ্মবেশ এবং বাল্ক মেসেজিং সহ আরো অনেক কিছু।
[ উপরোক্ত অপরাধ গুলোর মধ্য থেকে, যেকোনো একটির সাথে আপনার যদি সম্পৃক্ততা থাকে। তাহলে যে কোন মুহূর্তে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্লক কিংবা পুলিশের শরণাপন্ন হলেও হতে পারে। ]
ডিজাইন:
হোয়াটসঅ্যাপের ডিজাইনের কথা বলতে গেলে এক কথায় “অসাধারণ” হোয়াটসঅ্যাপ যারা দীর্ঘদিন ব্যবহার করে আসছেন, তারা হয়তো জানেন হোয়াটসঅ্যাপ এর ডিজাইন কতটা অ্যাট্রাক্টিভ। তাই ডিজাইন সম্পর্কে বেশি কিছু বললাম না।
হোয়াটসঅ্যাপ এর রেটিং এবং রিভিউ:
বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপের প্লে স্টোর রেটিং রয়েছে 4.1/5 এবং রিভিউ রয়েছে প্রায় ১৪২ মিলিয়নেরও বেশি। এর পাশাপাশি অ্যাপ স্টোরে রেটিং রয়েছে 4.7/5 এবং রিভিউ রয়েছে প্রায় ৮ মিলিয়নেরও বেশি।
হোয়াটসঅ্যাপ ডাউনলোড:
হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাপস টি আপনারা ডাউনলোড করতে পারবেন প্লে স্টোর অথবা অ্যাপ স্টোর থেকে। পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করা যাবে উইন্ডোজ এবং ওয়েব ব্রাউজারে।
শেষ কথা:
পরিবার, বন্ধু-বান্ধব কিংবা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ বর্তমানে বেশ আলোচিত। হোয়াটসঅ্যাপ এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে, সেই সাথে নিয়ম নীতিমালাও। তাই ব্যক্তিগতভাবে আমি আপনাদের রিকমেন্ড করব, হোয়াটসঅ্যাপে কোন ধরনের অনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ততা না রাখার।
কারণ, আপনার একটি অনৈতিক কাজের ফলে, ঘটে যেতে পারে অনেক কিছু।
ধন্যবাদ সবাইকে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top