দ্রুত গতিতে স্থল পথ দিয়ে যাতায়াতের জন্য ট্রেন ব্যবহার হয়ে আসছে ১৭৬৪ সাল থেকে। যা এখনো পর্যন্ত চলমান। অন্যান্য যানবাহনের মত ট্রেনেও রয়েছে টিকিটের ব্যবস্থা। যা ক্রয় করে ট্রেনে প্রবেশ করতে হয়। তবে ট্রেনের টিকিট কাটার বিষয়টি অনেকের কাছে একটু ঝামেলার মনে হয়। কারণ, প্রতিটি ট্রেনে সাধারণত ৭২ থেকে শুরু করে ৪০০ জন পর্যন্ত যাত্রী ধারণ করতে পারে। যার ফলে কাঙ্ক্ষিত স্টেশনে বিশাল আকারের লাইন বা ভিড় দেখা যায়। আর এই ভিড় বা লাইন সবাই অতিক্রম করতে পারেন না। ফলে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশ বেগ পেতে হয়। কিন্তু কেমন হয়? যদি আপনি স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই ঘরে বসে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারেন? উত্তরে হয়তো সবাই বলবেন; অবশ্যই ভালো হয়। কিন্তু কিভাবে? জ্বী! আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের মাঝে পরিচয় করিয়ে দিব একটি ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস এর সাথে। আর এর ফলে আপনাদের আর কখনোই স্টেশনে গিয়ে কাউন্টারের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে হবে না। আজ আমরা আপনাদের যে ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস টি শেয়ার করতে চলেছি। তার নাম: Rail Sheba / রেল সেবা।
Rail Sheba কি?
এটি বাংলাদেশ রেলওয়ে অথরাইজড এর নিজস্ব ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস। যা দেশের প্রত্যেক নাগরিক ব্যবহার করতে পারেন এবং সেই সাথে কাটতে পারেন ট্রেনের টিকিট। ট্রেনের টিকিট কাটা বেশ সহজ এই অ্যাপের মাধ্যমে। মাত্র দু তিনটি ধাপ পেরোলেই আপনার হাতে চলে আসবে ই-টিকিট। আর এই টিকিট ব্যবহার করে আপনি যাতায়াত করতে পারবেন আপনার কাঙ্খিত গন্তব্যে।
আরো জানুন: ঘরে বসে বাসের টিকিট কাটার সেরা অ্যাপস।
যেভাবে ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস এ একাউন্ট খুলবেন:
• প্রথমে আপনার মোবাইল থেকে প্লে স্টোর অ্যাপসটি ওপেন করুন এবং সার্চবারে লিখুন Rail Sheba.
• এরপর অ্যাপস টি আসলে ইনস্টল বাটনে ক্লিক করে ডাউনলোড সম্পূর্ণ করুন এবং ওপেন করুন।
• এরপর রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ নাম, ইমেইল, ফোন নাম্বার, পাসওয়ার্ড, আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার অর্থাৎ এনআইডি নাম্বার, ঠিকানা এবং পোস্টাল কোড দিয়ে রেজিস্টার বাটনে ক্লিক করুন।
[ এনআইডি কার্ড যদি আপনার না থাকে এক্ষেত্রে বার্থ সার্টিফিকেট এর নাম্বার প্রযোজ্য হবে। পাশাপাশি কোন নাম্বারে কোন ভেরিফিকেশন কোড আসলে তা রেজিস্টার করার সময় ব্যবহার করুন। ]
ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস ব্যাবহার করে যেভাবে টিকিট ক্রয় করবেন:
• প্রথমে অ্যাপটি ওপেন করুন এবং Buy Ticket এ ক্লিক করে কোন জায়গা থেকে কোন জায়গায় যেতে চাচ্ছেন তা উল্লেখ করুন। পাশাপাশি ক্লাস এবং কয় তারিখে যেতে চাচ্ছেন তা উল্লেখ করে Search Trains এ ক্লিক করুন।
• এরপর আপনার সামনে চলে আসবে টিকিট এবং এই মুহূর্তে যে ট্রেনগুলো অ্যাভেলেবেল রয়েছে।
• এরপর আপনার পছন্দ অনুযায়ী ট্রেন এবং সিট পছন্দ করে Continue Purchase বাটনে ক্লিক করুন।
• এরপর Proced বাটনে ক্লিক করে যে অনলাইন ব্যাংকিং গুলো ব্যবহার করে পেমেন্ট করতে চাচ্ছেন। তা সিলেক্ট করুন এবং Proced To Payment বাটনে ক্লিক করুন।
• সর্বশেষ যে অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহার করে পেমেন্ট করবেন তার ইনফরমেশন প্রোভাইড করুন এবং টিকিট সংগ্রহ করুন।
ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস এর সুবিধা সমূহ:
• এই অ্যাপ ব্যবহার করে যে কোন স্টেশন থেকে টিকিট ক্রয় করা যায়।
• মোবাইল ব্যাংকিং ছাড়াও ডেবিট এবং ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কেনা যায়।
• প্রতিটি যাত্রার হিস্টরি এবং ই-টিকিট ডাউনলোড করা যায়।
• অ্যাপটি ২৫৬-বিট এসএসএল সার্টিফাইড। তাই পেমেন্ট গেটওয়ে বেশ সিকিউর।
আরো জানুন: সকল সরকারী সেবা নিন এই অ্যাপ থেকে।
ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস খারাপ দিক:
নেই।
ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস এর ডিজাইন এবং ইউজার ইন্টারফেস:
অ্যাপটির ডিজাইন খুবই সুন্দর। এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে লাল এবং সবুজ কালার। আরো রয়েছে মিনিমাস্টিক ডিজাইন। সব মিলিয়ে অ্যাপসটি বেশ ইউজার ফ্রেন্ডলি অর্থাৎ যে কোন ব্যক্তি এই অ্যাপসটি নিঃসন্দেহে কোন প্রকারের ঝামেলা ছাড়া ব্যবহার করতে পারেন।
ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস এর রেটিং এবং রিভিউ:
রেটিং: 3.8/5★
রিভিউ: 2K+
যেভাবে ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপস ডাউনলোড করবেন:
অ্যাপসটি সরাসরি ডাউনলোড করতে এই লিংকে ক্লিক করুন অথবা প্লে স্টোরে গিয়ে সার্চ করুন Rail Sheba লিখে।
শেষ কথা:
কিছু বছর আগেও মানুষ ট্রেনের টিকিট কেনার সময় বিভিন্ন জটিলতার মুখোমুখি হতেন। কিন্তু এখন সম্পূর্ণরূপে যুগ বদলে গিয়েছে। যার ফলে এখন ঘরে বসেই ট্রেনের টিকিট ক্রয় করা সম্ভব। কোন প্রকারের ঝামেলা ছাড়া ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে উল্লিখিত অ্যাপটি ব্যবহার করুন। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ